Description
শর্মিলা বসু বইটিতে দাবি করেন যে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাগুলোকে বরাবরই একপাক্ষিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি এই প্রচলিত বর্ণনার পুনঃমূল্যায়ন করতে চান এবং তাঁর মতে, মুক্তিযুদ্ধের সময়কার কিছু ঘটনা অতিরঞ্জিত হয়েছে। লেখক দাবি করেন যে ইতিহাসের সত্য উন্মোচনে পক্ষপাতহীন দৃষ্টিভঙ্গি জরুরি।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষের মৃত্যুর যে দাবিটি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত, লেখক এই সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তি দেন যে এই সংখ্যা প্রকৃত মৃত্যুর তুলনায় অনেক বেশি। এই দাবিটি বাংলাদেশি পাঠকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়।
শর্মিলা বসু পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পাশাপাশি মুক্তিবাহিনী এবং অন্যান্য দলগুলোর সহিংস কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা করেন। তাঁর মতে, উভয় পক্ষই মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং যুদ্ধকালীন নিষ্ঠুরতা শুধু এক পক্ষের দোষ নয়।
বইটিতে মুক্তিযুদ্ধের সময় নারীদের ওপর সংঘটিত যৌন সহিংসতা এবং ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে প্রচলিত সংখ্যাকে লেখক চ্যালেঞ্জ করেন। তিনি দাবি করেন যে এই পরিসংখ্যানও অতিরঞ্জিত হতে পারে। তবে এই অংশটি সমালোচকদের মতে যুদ্ধের বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে একটি অসম্পূর্ণ চিত্র তুলে ধরে।
বইটির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বিভিন্ন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার। লেখক সরাসরি ভুক্তভোগী, যুদ্ধের সাক্ষী, এবং বিভিন্ন পক্ষের সদস্যদের অভিজ্ঞতা থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এতে ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ ও অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে যুদ্ধের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি উঠে এসেছে।
শর্মিলা বসু গবেষণার জন্য সাক্ষাৎকার, সংবাদপত্র, এবং সরকারি নথিপত্র ব্যবহার করেছেন। তবে তাঁর গবেষণা পদ্ধতি এবং তথ্য বিশ্লেষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সমালোচকরা বলেন, তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অপরাধ হ্রাস করার জন্য তথ্যকে বাছাই করে উপস্থাপন করেছেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা খাটো করেছেন।
লেখকের ভাষ্যমতে, তাঁর উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাগুলোর ‘সত্য’ তুলে ধরা, যা তিনি মনে করেন প্রচলিত বর্ণনার সঙ্গে সবসময় সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তবে সমালোচকদের মতে, এই “সত্য” উন্মোচনে তাঁর গবেষণার অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
Reviews
There are no reviews yet.